চিলমারীতে তরুন “চা”ওয়ালা সাহিত্যিকের ধুমকেতু সম আর্বিভাব!

তুহিন চিলমারী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধিঃবয়স তার কত হবে?ছোট থেকেই দেখছি ছোটাছুটি।কখনো বই হাতে,কখনো চায়ের ফ্লাক্স,কখনো বাজারের ব্যাগ,কখনো অন্য কিছু।এই ছোটাছুটির ফাঁকে তার কাজ এবং অর্জন গুলো প্রশংসিত।একটু পিছনে ফিরে দেখা যাক।
২০১২সাল।দোকানের পাশাপাশি ৬-৭কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে রানীগন্জ মদন মহন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় যাতায়াত এবং আনুষ্ঠানিক লেখার হাতে খড়ি।সেই সাথে অর্জন চিলমারী উপজেলার সম্মিলিত মেধা তালিকায় ১৩তম স্থান অর্জন করে।আর, বাবার আদর্শ- উৎসাহে আনুষ্ঠানিক কবিতা “প্রতিজ্ঞা” লেখে।যার কয়েকটি চরণ…..
“মা বাবা আমার গরিব মানুষ
মনে আশা ভারি,
তাই তো রোজ বিদ্যালয়ে
পাঠান তাড়াতাড়ি।”
২০১৫’তে রাধাবল্লভ উচ্চ
বিদ্যালয়ের অন্যতম মেধাবী এই ছাত্র তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেনি পর্যন্ত টানা প্রথম স্থানার্জনের পর জিপিএঃ৫.০০নিয়ে নবম শ্রেনিতে উক্ত বিদ্যালয়েই পদার্পন করেন।ইতিমধ্যে লেখালেখির জগতেও পদচারণা বন্ধু সহপাঠি মহল ছাপিয়ে শিক্ষক মহলে উঠে আসে।
২০১৭ সাল,শুরুর দিকে তার প্রথম কবিতার বইয়ের পান্ডুলিপি “গরীবের ফুটানি”তে সংরক্ষন করে বিভিন্ন সময়ে টুকরো কাগজে লেখা কবিতা গুলো। এর আগেই “মিলন স্যার”নামক একটি কবিতা লিখে ব্যাপক সমালোচিত হয়।হাস্য রসাত্বক, বন্ধু সুলভ এ শিক্ষকের হাত ধরেই শিক্ষা জীবনে বহুদূর পথ পাড়ি দেন।
উক্ত কবিতার শেষের দু’চরণ…..
“উপরের সব কথা দিবেন বাদ,
মারবেন না আমায় ধন্যবাদ।”
উল্লেখ্যযোগ্য বিষয়, আমি বিগত কয়েক বছর যাবৎ তাকে চিলমারী উপজেলার ব্যাপারী বাজারে দেখে আসছি চায়ের দোকানে বিক্রির ফাঁকে ফাঁকে বসে কিছু একটা লিখছে বা পড়ছে। এই দোকান নিয়ে তার কবিতাটি “আমার শ্রেষ্ট বিদ্যাপীঠ” যার চরণ হলো…..
“এই তো আমার শাহিগদি,
ভাবি বসে নিস্তব্ধ-নিরবধি;
এ ধরা-ধামকে স্বচক্ষে চিনিতে,
সব অনুভুতি আকর্ষণ জিনিতে
ছুটি মনে পথ প্রান্তর
সাত- সমুদ্র- স্থল-তেপান্তর।
*******
রাখি যতন আদরে পরি বধে,
বসে আমার এই মসনদে।”
তাঁর পরিচয়ের প্রথমে বলা যায়….
“মোড়ের চা ওয়ালার আমি ছেলে,
মা বাবার কোলে বাঁচি মরি,
দূঃসময়ে সংসার হাল ধরি,
ক্ষুধা মিটাই জলে,খাই তো পেলে।”
আবার,কিছুটা পরিচয় পাওয়া যায় “প্রতিজ্ঞা” কবিতায়……
“নামটি আমার তৌহিদুল ইসলাম,
বড়ুয়া তবকপুরে বাড়ি;
বুকে অনেক আশা নিয়ে
বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করি।
তার লেখায় বিশেষ করে কবিতায় সমকালীন বিষয় গুলো উঠে এসেছে।সে আবরার ফাহাদ,আরিফুল ইসলাম রিগ্যান,রমনার মিনু বালা এবং বেগম রোকেয়া ঈশ্বরচন্দ্র,কাজী নজরুল ইসলাম,শেখ মুজিবুর রহমান প্রমূখ সহ ধর্ষন খুন খারাপি, প্রশ্নফাঁস,বাংলাদেশের উন্নয়ন,প্রেম ভালোবাসা,মহামারী,দূর্যোগ, নিজের জিবন ও দর্শন এবং ইসলামিক বিষয়বস্তু নিয়ে নানান বিষয় তুলে ধরেছে।আঞ্চলিক ভাষা, ইংরেজি ভাষা, এমন কি হিন্দি ভাষাও কবিতা লেখার চেস্টা করে,যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশংসা কুড়িয়ে আনে।কয়েকটি পত্রিকায় ইতিমধ্যে দু’একটি কবিতা প্রকাশিত হয়েছে।
সমসাময়িক তার কবিতার কয়েকটি চরণ যা আমাকে বিশেষভাবে মুগ্ধ করেছে তা হলো….
“যতদিন রবে পক্ষপাতীত্ব,
অনূকরণের অসুস্থ্য অস্তিত্ব;
উত্তরসূরীর অন্ধ অনুসারী,
আমি শপথ করে বলতে পারি—
‘না না না না হবে না কোনদিন
সমাজ দূর্নীতি আর শোষণহীন।…..”
পরিচয়ঃ
নামঃ মো. তৌহিদুল ইসলাম তাজেল